গারো সমাজের লিঙাম (মেগাম) গোত্রের লোকদের স্বীয় ভাষা সংস্কৃতি রক্ষার প্রচেষ্টা সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

গারো সমাজের লিঙাম (মেগাম) গোত্রের লোকদের স্বীয় ভাষা সংস্কৃতি রক্ষার প্রচেষ্টা

গারো নিউজ টুয়েন্টিফোর ডেস্ক, 


বাংলাদেশে বসবাসকারী আদিবাসী নৃ-গোষ্ঠীর মোট জনসংখ্যা, মোট গোত্রের সংখ্যা নিয়ে সরকারি বেসরকারিভাবে নানা মতভেদ রয়েছে। সংখ্যার বিচারে যাই হোক, প্রতিটা জাতিগোষ্ঠীর কাছেই নিজস্বতা প্রাধান্য পায়। ফলে নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে সবাই কমবেশি চেষ্টা করে চলেছেন। তেমনি গারো সমাজের তেরটি গোত্রের একটি গোত্র লিঙাম, যা মেগাম বা মিগাম নামেই অধিক পরিচিত জনগোষ্ঠীর লোকেরা বিশ্বায়ণের এই যুগে নিজেদের মেলে ধরতে চেষ্টা করে যাচ্ছেন। এই মেগাম জনগোষ্ঠীর লোকেরা নিজেদের লিঙাম পরিচয় দিতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। 

এই জনগোষ্ঠী বাংলাদেশের নেত্রকোণা জেলার ভারত সীমান্তবর্তী কলমাকান্দা থানার ৮নং রংছাতী ইউনিয়নের তেরটি গ্রামে যুগ যুগ ধরে বসবাস করে আসছে। তারা যেসব গ্রাম গুলোতে বসবাস করেন সেসব গ্রামের নাম গুলো হলো: দ্বীপপুর, বেংকোনা, মহাদেও, ছোট মনগড়া, বড় মনগড়া, বড়দল, কান্দাপাড়া, বরুয়াকোণা, পাতলাবান, সন্যাসীপাড়া, জাগিরপাড়া, পাচঁগাও এবং নংক্লাই। লিঙামদের মোট জনসংখ্যা : ২,৭৪৮ জন ; তার মধ্যে নারী: ১,৩৩৭ জন, পুরুষ: ১,৪১১ জন, মোট পরিবার: ৪০৫ । এটি একটি জরিপের প্রতিবেদন। জরিপটি স্বীয় গোত্রের অভিভাবক পর্যায়ের সংগঠন ”বাংলাদেশ গারো লিঙাম (মেগাম) এসোসিয়েশন” – এর প্রতিষ্ঠাতা মি: পিটারসন কুবি পিটারের পৃষ্ঠপোষকতা ও উদ্যোগে গত বছর ২০২১ খ্রীষ্টাব্দে তথ্য সংগ্রহ করে সহযোগিতা করেন সংগঠনের শিক্ষা ও সংস্কৃতি সম্পাদক মি: প্রভাত নংউড়া। স্বীয় জাতির কল্যাণের স্বার্থে পূর্বে আরেকটি ”লিঙাম ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন” নামে সংগঠন ছিল। শুরুতে নানা কর্মসূচীর মাধ্যমে এ সংগঠন সফলতা পেলেও পরবর্তীতে নানা প্রতিকূলতার কারণে তা আর বেশিদূর এগুতে পারেনি। বর্তমান ২০২১ সালের ১৬ আগস্টে জম্ম নেয়া সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক পিটারসন কুবির উদ্যোগে নিজের জাতি গোষ্ঠীর ভাষা সংস্কৃতিকে বিশ্বের অন্যান্য জাতি গোষ্ঠীর কাছে তুলে ধরার জন্য ফেইসবুক পাবলিক গ্রুপ BD Lyngam (Megam) Language , নিজেদের গোত্রের লোকদের সাথে পারস্পারিক সম্পর্কের উন্নয়ন ঘটাতে মেসেন্জারে Conversation For The Nation নামে, ফেইসবুকে Bangladesh Garo Lyngam (Megam) Welfare Association নামে প্রাইভেট গ্রুপ ক্রিয়েট করেন। উনার তাগিদবোধ ও উৎসাহে কিছু স্বগোত্রীয় যুবাদের সহযোগিতায় লিঙাম (মেগাম) অধ্যষিত বেশ কিছ গ্রাম গুলো আলাদা করে সোস্যাল মিডিয়া ফেইসবুক ভিক্তিক গ্রুপ খোলা হয় যা পারস্পারিক সুসম্পর্ক বৃদ্ধিতে এবং লিঙাম গোত্রকে তুলে ধরতে সহায়ক ভূমিকা রাখছে। 


উল্লেখ্য সেসব গ্রাম ও এডমিনবৃন্দরা হলেন- দ্বীপপুর এবং বেংকোনা যুব সংগঠন – এডমিন মি: সালগিও নংমিন, BORO MONGORA Social Welfare Association –এডমিন মি: সৌরভ পি নংমিন, কান্দাপাড়া যুব পরিবার – এডমিন মি: হিমেল কুবি, সন্যাসীপাড়া ঐক্য যুব সংগঠন – এডমিন মি: লন্দাস লিখন কুবি, জাগিরপাড়া চংসন যুব সংগঠন – এডমিন মি: বিভব ঘাগ্রা, নংক্লাই লিঙাম যুব সংগঠন – এডমিন মি: বিশাল রংরিন, মেসেন্জারে পাচগাঁও – এডমিন মিসেস্ সারা হাচ্চা। নিজেদের তাগিদেই স্বীয় গ্রামের লোকদের সহযোগিতা করার লক্ষ্যে যারা আগে থেকেই ফেইসবুক গ্রুপ খুলেছেন – পাতলাবান যুব সংগঠন – এডমিন রিজন হাপাং, ছোট মনগড়া যুব সংগঠন- এডমিন রুবেল ঘাগ্রা, মেসেন্জারে নংসড়ক পরিবার/মহাদেও – এডমিন পলিকার্প দিখার। এরা সবাই বর্তমান প্রজন্মের সন্তান, স্বীয় লিঙাম (মেগাম) সমাজের উন্নয়নের লক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছে। 


লিঙাম গোত্রের বয়োজ্যেষ্ঠ যিনারা বিভিন্ন সময়ে স্বীয় ভাষা সংস্কৃতিকে তুলে ধরার প্রয়াস চালিয়েছেন উনারা হলেন – মি: সুরেশ নংমিন, সুজানা হাচ্চা, মি: লুয়ের নংমিন, মিসেস্ প্রীতিলতা কুবি, মি: অবনী নংমিন, মিসেস্ অন্তিমা ময়না নংমিন, মি: আলফন্স নংমিন প্রমুখ। লিঙাম জনগোষ্ঠীর ছাত্রদের সংগঠন “লিঙাম স্টুডেন্ট ইউনিয়ন” স্বীয় এলাকা কলমাকান্দা, ময়মনসিংহ, ঢাকায় স্বগোত্রীয় লিঙাম স্টুডেন্টদের নিয়ে বিভিন্ন সেমিনার, বাৎসরিক ম্যাগাজিন প্রকাশ করেও স্বীয় ভাষা সংস্কৃতি রক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
এতসব কিছুর মাঝে একটি খুশির খবর এই যে, লিঙাম গোত্রের ভাষার বর্ণমালা আবিষ্কার করেছেন মি: সুরেশ আলবার্ট নংমিন। অবসর প্রাপ্ত শিক্ষক। উনি বেশ কিছু গান ও কবিতা লিঙাম ভাষায় রচনা করেছেন। উনার আবিষ্কৃত অক্ষরের মাধ্যমে উনার শিক্ষাদানে অনেক লিঙাম ছেলেমেয়ে নিজের ভাষায় এক সময় পড়তে লিখতে পারলেও চর্চার অভাবে এখন তা অনেকে ভুলতে বসেছে। সরকারি বেসরকারি অর্থায়ণ ও পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে লিঙাম ভাষার ব্যাপক প্রচার, প্রসার ও চর্চা বেশিদূর আগাতে পারিনি। সংস্কৃতিমনা কোনো ধনাঢ্য উদার ব্যক্তি বা দেশি বিদেশি সংস্থার পৃষ্ঠপোষকতা পেলে হয়তো গারো সমাজের লিঙাম গোত্রের ভাষার বর্ণমালার চর্চা ও বাস্তব প্রয়োগ আরও বাড়তো এবং এতে বিশ্বে অন্যান্য জাতির সামনে মাথা উচুঁ করে গর্বের সাথে সামনে এগোতে পারতো, ভাষা পাকাপোক্ত সংরক্ষণের একটি সুব্যবস্থা হতো।
উল্লেখ্য, সাম্প্রতিককালে স্বীয় ভাষাকে আরো পাকাপোক্ত করতে, সংরক্ষণ করতে নিজস্ব লিঙাম ভাষার অভিধান (ডিকশনারি) লিখতে শুরু করে দিয়েছেন মি: পিটারসন কুবি। পেশায় উনি একজন শিক্ষক। তিনি বিভিন্ন ম্যাগাজিনে মাঝে মধ্যে লেখালেখিও করে থাকেন। উনার লেখা কবিতা, ছোট গল্প, প্রবন্ধে সমাজের, স্বগোত্র লিঙাম সমাজের নানা বিষয়ের অবতারনা করতে দেখা যায়। ইদানীং তিনি বেশ কিছু বাংলা ও হিন্দি গানের নিজের গোত্রের লিঙাম (মেগাম) ভাষায় অনুবাদ করেছেন এবং কিছু গানে নিজেই কণ্ঠও দিয়েছেন। তিনি যেসব গানের লিঙাম ভাষায় অনুবাদ করেছেন সেগুলো হলো: মধু হই হই বিষ খাওয়াইলা, বলবো না গো আর কোনদিন ভালবাসো তুমি মোরে, হারানো হিয়ার নিকুন্জ পথে, অতীতের কথা গুলো পুরোনো স্মৃতি গুলো, একদিন মাটির ভিতরে হবে ঘর, ভালোবাসার মতো ভাল বাসলে তারে কি ভুলা যায়, আমার যাবার সময় হলো দাও বিদায়, সুন্দরী গো দোহাই দোহাই মান কর না, নিঝুম সন্ধ্যায় পান্থ পাখিরা, এই কি গো শেষ দান, দুটি মন আর নেই দুজনার, বড় সাধ জাগে, চেনা চেনা লাগে তবু অচেনা, আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, ও আমার দেশের মাটি ইত্যাদি। মিউজিক কম্পোজিশনে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সহায়তা পেলে আরও বহুদূর আগাতে পারবেন বলে আশা রাখেন। মেগাম ভাষায় বেশ কিছু কবিতা ও গান রচনাও করেছেন। বর্তমান প্রজন্মের বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া মেগাম গোত্রের ছেলেমেয়েরা লেখালেখির চেষ্টা করে যাচ্ছেন। তাদের মধ্যে মি: প্রভাত নংউড়া, মি: রিংখেং নংউড়া, মি: শিমুল নংউড়া, মি: পনুয়েল হাচ্চা, মি: ফিলিপ নংউড়াসহ অনেকেই নিজের ভাষায় গল্প, কবিতা লেখার চর্চা করে যাচ্ছেন। 
শুধু ভাষা সংস্কৃতি নয়, অন্যান্য বিষয়ের স্বীয় গোত্রের বর্তমান লিঙাম (মেগাম) ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন সংগঠনের সভাপতি মি: সুরন্জন হাজং, সহ সভাপতি মিসেস সুজয়া ঘাগ্রা ও মি: বিপ্লব কুবি, সমাজকল্যাণ সম্পাদক মি: বাবুল নাফাক ও অন্যান্য সদস্যগণ পরোক্ষ প্রত্যক্ষভাব কলমাকান্দার বরুয়াকোনায় বেআইনীভাবে অবৈধ বালি ও পাথর উত্তোলনের বিরুদ্ধে আলোচিত ”মহাদেও নদী রক্ষা কমিটি”কে সার্বিক সহযোগীতা করে মানব বন্ধন সমাবেশকে আরও বেগবান করে তুলতে সাহায্য করেছেন। শুধু ভাষা সংস্কৃতি রক্ষাই নয়, সংগঠনটি নতুন হিসেবে প্রতিষ্ঠার বছরেই ২৬ ডিসেম্বর ২০২১ সালে বস্ত্র বিতরণ কর্মসূচি, প্রতিটা গ্রামের লিঙাম পরিবারে ফ্রি ক্যালেন্ডার বিতরণ, লিফলেট প্রদান, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন, অনলাইন মিটিংয়ের মাধ্যমে স্বীয় সমাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। 
ফেব্রয়ারি ভাষার মাসে অনলাইনে নিজের লিঙাম ভাষায় কবিতা ও গানের প্রতিযোগীতার আয়োজন করা হয়েছে। স্বীয় জাতিগোষ্ঠীর পত্রিকা প্রকাশ করা, একটি স্বতন্ত্র্য ওয়েবসাইট এবং ইউটিউব চ্যানেল খোলাও তাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় রয়েছে। বিশ্বায়ণের এই যুগে সবার সাথে অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীদের সাথে তাল মেলাতে, নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে লিঙাম গোত্রের একই উপাধীধারীর সংগঠন যা গারো ভাষায় “মাহারী” সংগঠনের ছায়াতলে মাসিক বা বাৎসরিক অর্থ সঞ্চয় করছে, নিজেরাই সমস্যার সমাধান করে ভ্রাতৃত্ব ও শান্তির পরিবেশ বজায় রেখে উন্নয়নের দিকে ধাবিত হচ্ছে। 
বাংলাদেশের মাত্র একটি ইউনিয়নে স্বল্প সংখ্যক বসবাসকারী গারো সমাজের লিঙাম (মেগাম) জনগোষ্ঠীর লোকেরা জীবন সংগ্রামে নানা প্রতিকূলতার মাঝেও নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে চেষ্টার কমতি রাখছে না। এক্ষেত্রে অগ্রগতির পথে এগোতে অন্যান্য জাতি গোষ্ঠীর ব্যক্তি, সমাজ, সংস্থা সংগঠন পর্যায়ে একান্ত সহযোগিতারও প্রয়োজন।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

'মধুপুর সরকারী কলেজঃ অবসরকালে যেমন কেউ বিদায় দেন না,তেমনি কেউ বিদায় পান না' - এমনই হৃদয় বিদারক স্ট্যাটাস অবসরপ্রাপ্ত সহকারী অধ্যাপক ও সিনিয়র সাংবাদিক জয়নাল আবেদীনের, নেট দুনিয়ায় তোলপাড়

জেফিরাজ দোলন কুবি, ময়মনসিংহ থেকে 'মধুপুর সরকারী কলেজঃ অবসরকালে যেমন কেউ বিদায় দেন না, তেমনি কেউ বিদায় পান না' - এমনই হৃদয় বিদারক ফেইসবুক স্ট্যাটাস ঝড় তুলেছে নেট দুনিয়ায়! মধুপুর সরকারী কলেজের অবসরপ্রাপ্ত সহকারী অধ্যাপক জয়নাল আবেদীন-এর স্ট্যাটাসে ঐ কলেজের কিছু বর্তমান, প্রাক্তন কলেজ শিক্ষক এবং ছাত্র - ছাত্রীরা কমেন্ট করেছেন। কেউ কেউ দুঃখ প্রকাশ করেছেন। সেখানে কিছু অভিভাবকগণও তাঁদের অভিমত প্রকাশ করেছেন। সব মিলিয়ে ঠিক মোক্ষম সময়ে স্ট্যাটাসটি সবার মনে এবং হৃদয়ে দাগ কাটতে পেরেছে মনে করছেন সবাই। অনেকে একে ইতিবাচক পরিবর্তনের ইঙ্গিত বলে মনে করছেন। যিনি স্ট্যাটাস দিয়েছেন, তিনি ঐ কলেজের সহকারী অধ্যাপক (অবসর প্রাপ্ত), ইতিহাস বিভাগ। তিনি ৪০ বছরেরও অধিক সময় ধরে কাজ করছেন দৈনিক ইত্তেফাকের সিনিয়র করেস্পন্ডেন্ট হিসেবে। লেখাটি গুরুত্ব পেয়েছে এই কারণেও। স্ট্যাটাসে তিনি লিখেন, " টাঙ্গাইলের মধুপুর সরকারি কলেজ (বর্তমানে) এমন একটি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান যেখানকার শিক্ষক এবং স্টাফরা অবসরে গেলে কেউ কাউকে কখনো বিদায় সংবর্ধনা দেন না এবং প্রতিদানে কেউ সংবর্ধনা পান না! এজন্য অধ্যক্ষদের ভাগ্য...

নৌ বাহিনীতে অফিসার ক্যাডেট হিসেবে যোগ দিলেন সিমব্রি অর্ণি সাংমা

জেফিরাজ দোলন কুবি ময়মনসিংহ থেকে,  বাংলাদেশ নৌ বাহিনীতে অফিসার ক্যাডেট হিসেবে যোগ দিয়েছেন সিবব্রি অর্ণি সাংমা। তিনি ৫ জানুয়ারী, ২০২২ ঢাকার নৌবাহিনীর সদর দপ্তরে উপস্থিত হয়ে যোগদান নিশ্চিত করেন। পরবর্তীতে সাংমা গত ৮ জানুয়ারী পতেঙ্গা নাভাল একাডেমীতে ৩ বছর মেয়াদী দীর্ঘ মেয়াদী প্রশিক্ষণে যোগ দেন। অর্ণি গারো আদিবাসীদের মধ্যে সর্বপ্রথম নৌবাহিনীর কমিশন্ড র‍্যাংক-এ সুযোগ পেলেন।      বাবা-মা ও বোনদের সাথে  অর্ণি  নৌবাহিনীর নিয়ম অনুযায়ী নৌবাহিনীর নেভাল একাডেমীতে অফিসার ক্যাডেট হিসেবে ১৮ মাস ও মিভশিপম্যান হিসেবে ১৮ মাস আন্তর্জাতিক মানের প্রশিক্ষণ শেষে বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে সাব-লেফটেন্যান্ট পদে নিয়মিত কমিশন প্রদান করা হয়ে থাকে।     গারোদে র পোশাক পরতে ভালোবাসেন  অর্ণি সাইমন স্বর্ণেন্দু সাংমা ও সুচরিতা রেমার জেষ্ঠ সন্তান সিমব্রি অর্ণি সাংমা ছোটবেলা থেকেই ভীষণ মেধাবী। অর্ণি ময়মনসিংহের ভিক্টোরিয়া মিশন প্রাইমারী স্কুলে পড়াশুনা শেষ করে কৃতিত্বের সাথে মুসলিম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় হতে এসএসসি ও মুমিনুননেসা সরকারী মহিলা কলেজে হতে এইচএসসি...

আমার দেখা একজন সাদা মানুষ

  In Memory of Hon'ble State Minister for Social Welfare Affairs, late Pa Advt Promod Mankin MP. Rest in peace Sir... প্রাক কথন কলেজ জীবন শুরু করার আগে আমার শৈশব, কৈশোর এবং যৌবনে দেখা একজন অসাধারণ মানুষকে নিয়ে কবিতা লেখা শুরু করেছিলাম! সে লেখা আজও শেষ করতে পারি নি। ইচ্ছে করত একটা সাদামাঠা সে কবিতা হবে, হয় নি। আজ আবার সেই মানুষটাকেই নিয়ে লিখছি। একদম সাদা - রঙহীন, গন্ধহীন, রসহীন হবে সে লেখা। লেখায় রঙ চং রাখতে চাই না। আমার কাছে থেকে, দূরে থেকে দেখা না দেখা কিছু কথা। একান্ত ব্যক্তিগত কিছু নিরীক্ষণ থেকে। এক তখন দ্বিতীয় কিংবা তৃতীয় শ্রেণীতে পড়ি। জীবনে প্রথম তাঁকে দেখেছি! বাবা বললেন, "তোমার ফাজং (জ্যাঠা), সালাম করো।" যে লোকটাকে কখনো দেখিই নি, তাঁকে ঝুপ করে সালাম করাটা কিছুটা কষ্টেরই ছিল বটে আমার জন্য। তাই আমি "নমস্কার আংকেল, কেমন আছেন?" বলে কেটে পড়তে চাইলাম। "ভাল, তুমি কেমন আছ? তুমি তো খুব সুন্দর করে নমস্কার দিতে পারো বাবা। কি নাম তোমার?" আরও কিছু কথা চলল। তারপর তিনি বললেন, "তুমি তো খুব সুন্দর করে বাংলা বল! তোমাকে আমার পছন্দ হয়েছে। দেখো, আমা...

সর্বাধিক পাঠ করা লেখা

নৌ বাহিনীতে অফিসার ক্যাডেট হিসেবে যোগ দিলেন সিমব্রি অর্ণি সাংমা

জেফিরাজ দোলন কুবি ময়মনসিংহ থেকে,  বাংলাদেশ নৌ বাহিনীতে অফিসার ক্যাডেট হিসেবে যোগ দিয়েছেন সিবব্রি অর্ণি সাংমা। তিনি ৫ জানুয়ারী, ২০২২ ঢাকার নৌবাহিনীর সদর দপ্তরে উপস্থিত হয়ে যোগদান নিশ্চিত করেন। পরবর্তীতে সাংমা গত ৮ জানুয়ারী পতেঙ্গা নাভাল একাডেমীতে ৩ বছর মেয়াদী দীর্ঘ মেয়াদী প্রশিক্ষণে যোগ দেন। অর্ণি গারো আদিবাসীদের মধ্যে সর্বপ্রথম নৌবাহিনীর কমিশন্ড র‍্যাংক-এ সুযোগ পেলেন।      বাবা-মা ও বোনদের সাথে  অর্ণি  নৌবাহিনীর নিয়ম অনুযায়ী নৌবাহিনীর নেভাল একাডেমীতে অফিসার ক্যাডেট হিসেবে ১৮ মাস ও মিভশিপম্যান হিসেবে ১৮ মাস আন্তর্জাতিক মানের প্রশিক্ষণ শেষে বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে সাব-লেফটেন্যান্ট পদে নিয়মিত কমিশন প্রদান করা হয়ে থাকে।     গারোদে র পোশাক পরতে ভালোবাসেন  অর্ণি সাইমন স্বর্ণেন্দু সাংমা ও সুচরিতা রেমার জেষ্ঠ সন্তান সিমব্রি অর্ণি সাংমা ছোটবেলা থেকেই ভীষণ মেধাবী। অর্ণি ময়মনসিংহের ভিক্টোরিয়া মিশন প্রাইমারী স্কুলে পড়াশুনা শেষ করে কৃতিত্বের সাথে মুসলিম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় হতে এসএসসি ও মুমিনুননেসা সরকারী মহিলা কলেজে হতে এইচএসসি...

নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে জায়গা করে নিলেন ১১ মেধাবী গারো শিক্ষার্থী

ফৈবি কুবি, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভর্তি যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়ে ময়মনসিংহের ত্রিশালে অবস্থিত জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার জায়গা করে নিয়েছেন ১১ জন গারো কৃতি শিক্ষার্থী। তাঁরা ২০২০-২০২১ সেশনে ভর্তি হবেন। ডেলা চিরান দৃষ্টি মানখিন যারা বিভিন্ন বিষয়ে পড়ার যোগ্যতা অর্জন করলেন তারা হলেন : দৃষ্টি মানখিন (নৃবিজ্ঞান), জেসিকা নকরেক স্বস্তি(আইন), পাপিয়া চিছাম(আইন), ডেলা চিরান (ফিন্যান্স), রিংচি মৃঃ (একাউন্টিং), স্পন্দন রেমা( কম্পিউটার সাইন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং), ইফ্রোইম রেমা (কম্পিউটার সাইন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং), নিঃস্ব রংদী( অর্থনীতি), রুদ্র ম্রং( সমাজবিজ্ঞান), ইসুদুর পল রংদী(পপুলেসন সাইন্স) এবং সাগাল সিমসাং(দর্শন)। পুনশ্চঃ সবার ছবি পাওয়া যায় নি। পাওয়া মাত্র আমরা সবার ছবি দিয়ে দিব ... সংবাদ টি শেয়ার করে বন্ধু - স্বজনদের জানিয়ে দিন

ময়মনসিংহ-হালুয়াঘাটে ২ গারো আদিবাসী ছাত্রী সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকারঃ ধর্ষকেরা এখনও ধরা ছোঁয়ার বাইরে

ময়মনসিংহ থেকে নিজস্ব প্রতিবেদক,  গত ৩০ ডিসেম্বর ময়মনসিংহ জেলার হালুয়াঘাটের গাজিরভিটা ইউনিয়নে দুইজন গারো আদিবাসী ছাত্রী গণ ধর্ষণের শিকার হয়েছে।  ধর্ষিতা ছাত্রীদের বয়স ১৩-১৪ হবে।  জানা গেছে বিয়ের অনুষ্ঠান শেষে রাতের বেলা বাড়ি ফেরার পথে ঐ দুই জন স্কুল ছাত্রী ছয় বখাটে যুবকদের দ্বারা ধর্ষণের শিকার হয়।  ধর্ষকদের একজনের নাম মোঃ রিয়াদ বলে জানা গেছে। রিয়াদ কচুয়াকুড়া গ্রামের সাবেক মেম্বার আব্দুল মান্নানের পুত্র এবং বাকী ৫ জন ধর্ষক রিয়াদের বন্ধু বলে জানা গেছে।  এদের বয়স ২০-২৫ এর মধ্যে হবে বলে জানা গেছে।  হালুয়াঘাট থানার ওসি জানিয়েছেন, তাঁরা আসামীদের খুব শীঘ্রই গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনবেন।  তবে এলাকাবাসী বলছেন, বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চলছে। সামাজিক এবং ছাত্র সংগঠনগুলো এখনও অনেক টা নীরব। এই সংগঠনগুলো প্রতিবাদ করলেই কেবল ধর্ষকদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করা যাবে বলে তাঁরা মনে করছেন।  বাগাছাস-গাসু-টিডব্লিওএ এর নেতাদের নীরবতায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন এলাকাবাসী। বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া সেরেজিং সাংমা(ছদ্মনাম) তাঁর ক্ষোভ এবং হতাশা ব্যক্ত করে বলেন, "বাগাছাস...