শুভজিত সাংমা, সাবেক নকমা, ঢাকা ওয়ানগালা
এক
কথায় আছে "সাহস হলো লক্ষী", আমরা এই কথা ভুলেই বসেছিলাম। আমাদের মধুপুরের মানুষদের একসময় মুক্তির স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন পরেশ মৃ, তারি ধারাবাহিকতায় মি. বেনেডিক্ট মাংসাং বৃহত্তর ৯ নং অরনখোলায় গারো-বাংগালীদের ভোটে বিপুল জয় নিয়ে আমাদের মুখ উজ্জ্বল করেছিলেন। অনেক বাধা-বিপত্তি, হুমকি-ধামকি উপেক্ষা করেও তিনি সেরা চেয়ারম্যানের তকমা পেয়েছিলেন।
দুই
এরপর চলেশ রিছিলের মত সাহসী নেতাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে।
আরেক তরুন, সাহসী, চৌকস এবং দক্ষ নেতা বাবুল ডি' নকরেক আমাদের স্বপ্ন দেখাতে শুরু করেছিলেন । বিশ্বাস করি দেশে থাকলে উনি অবশ্যই এতদিনে এমপি ইলেকশন করতেন। এই পোস্টে নির্বাচন করারমত সবকিছুই উনার ছিলো। আরেক অতি তরুন যুবা Alik Mree বাম দলের হয়ে টাংগাইল-১ আসনে এমপি নির্বাচন করার জন্য ইচ্ছে প্রকাশ করেছিলেন। আমরা তাকেও সাধুবাদ জানিয়েছিলাম। যে কোন পরিস্থিতিতে আমাদের যুবকদের এই ধরনের সিদ্ধান্তকে আমরা উৎসাহিত করি। এবারও তার ব্যত্যয় নয়, এই পথে শাওন রুগা অগ্নিস্ফুলিঙ্গ। আমরা তার এই সাহসী সিদ্ধান্তকে সাদরে গ্রহন করছি।
তিন
শাওন রুগা কেমন, তার কি আছে, কি নেই সেসব বিশ্লেষণের অনেক সময় আছে। বোধ করি আপনারা একমত হবে যে, আমরা যাদের যোগ্য বলি, সেসব তথাকথিত যোগ্য মানুষরা কোনদিন নির্বাচনে আসেনি। বরং শাওনের মতো মানুষরাই বরাবরই রাজনীতিকে নিয়ন্ত্রণ করেছে। অভিজ্ঞতা বলে ইদানীং তরুন সব নেতারাই ভালো করছে। জাতীয়, সামাজিক সব প্রেক্ষাপটেই তরুন নেতৃত্বের জয়জয়কার। সবাই সবকিছু শিখে আসে না, সুযোগ দিতে হয়। আমৃত্য জায়গা ধরে রাখলে তরুনরা সুযোগ পাবে কিভাবে? মনে রাখতে হবে এখন আর কেউ জায়গা ছেড়ে দেয়া না, জায়গা করে নিতে হয়।
চার
মধুপুরের বর্তমান প্রেক্ষাপটে শাওনের এই সিদ্ধান্ত সময়োপযোগী। শাসক গোষ্ঠীকে একটা মোক্ষম জবাব দেয়ার সুবর্ন সুযোগ। শোলাকুড়ি ১১ নং ইউনিয়নের ৪৭% গারো ভোট লেকের বিপরীতে একেকটা জবাব, নিরব প্রতিবাদ। এই সুযোগ হাতছাড়া করা সমিচিন হবে বলে মনে হয় না।
পাঁচ
আমরা মেঘালয়ের Bachu Chambugong Marak কে চিনি কিনা? যিনি বিজেপি সরকারের গরু না জবাই করার আদেশের প্রতিবাদের রাজ্য সভাপতির পদ থেকেই ইস্তফা দিয়েছিলেন।
ছয়
শাওন রুগা এমনি এক তরুন যে মধুপুরে গারোদের জমিতে বিনোদনের লেক করার প্রতিবাদে সরকার দল থেকে বেরিয়ে অবস্থান নিয়েছে। একে কিভাবে মূল্যায়ন করবেন তা একান্তই আপনার ব্যাপার। যদি অবমুল্যায়ীত হয় তবে প্রজন্মরা নিরুৎসাহিত হবে। ১১ নং শোলাকুড়ির গারো ভোটারদের আমার অনুরোধ, আপনার মেন্ডেট নিয়ে যারা আপনার ক্ষতি করবে আপনি তাদের ভোট না দিয়ে বরং ঘরের ছেলেকে ভোট দিন। আর বাকী ৫৩% ভোটারদের বলবো, আপনাদের তো অনেক ভোট দিয়েছি, এবার আমাদের একটা ভোট দিয়ে দেখেন। তারুণ্যের গতি দেখেন। ভোট জলে যাবে না আশা করি।
সাত
এবং সবশেষে, এটা শুধু নির্বাচন নয়, এটা আমাদের জন্য একটা আনদোলন, একটা অবস্থান, শাসক গোষ্ঠীর জন্য একটা মেসেজ, একটা ভায়াব্রেশন।
১৫ তারিখ সারাদিন
ঘোড়া মার্কায় ভোট দিন।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Thanks for supporting