ঢাকা থেকে তপন হাগিদক,
জাতীয় জাদুঘর সামনে 'কারো বিক্ষা ও সাহায্য চায় না ' ব্যানার ঝুলিয়ে কিডনি বিক্রি করতে চান সাইফুল ইসলাম হাসিব (৩২ ) নামের এক যুবক। তিনি সাভারের আশুলিয়া থাকেন এবং দাবি করেন তিনি মাদকাসক্ত নন এবং পুরোপুরি মানসিকভাবে সুস্থ্য।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে সাইফুল বলেন, আগে মিশুক (অটোরিকশা, ব্যাটারি চালিত) চালিয়ে ঠিকঠাক চলছিলো।
কিন্তু ২০১৯ সালের করোনা কালে তিনি অটোরিকশা এক্সিডেন্ট করে পা ভাঙেন, পাজর মারাত্মক আক্রান্ত হন। এরপর বন্ধুবান্ধব ও অটোরিকশা মালিকের কাছে ধার করে সুস্থ হলেও এখন ৭৫ হাজার টাকা ঋণ হয়েছে বলে জানান। টাকা পরিশোধ করতে করতে ও আবার অটোরিকশা চালিয়ে উপার্জন করতে না পারার হতাশায় বলেন 'এই টাকা পরিশোধ করতে পারছি না দেখে অটোরিকশা মালিক এখন অটোও দেয় না, বাঁচবো কী করে?'
এর পর বেকারি থেকে শুরু করে গার্মেন্টস পর্যন্ত কাজ করার চেষ্টা করেছেন বলে জানালেন। কখনো বেতন ঠিকমতো দেয় না তো নানান অজুহাতে চাকুরীচ্যুত করা হয় বলে অভিযোগ করেন এবং বিষয়টি নিয়ে পুলিশের কাছে গেলেও সাহায্য পাননি বলে দাবি করেন।কিডনি বিক্রির মতন কঠিন সিদ্ধান্ত কেনো? অন্য যে কোন চাকুরী করেও তো চলতে পারেন বললে তিনি বলেন, "ভাই আমি আর কারো সাহায্য কিংবা করুনা চাই না। আট বছর বয়সে রাস্তায় বোতল কুড়িয়ে বিক্রি করতাম রমনা পার্কের বটমূলে দিকে, একদিন সাহায্যের নামে এক লোক আমাকে তার বাসায় নিয়ে গোসল করিয়ে খাওয়ানোর পর বলাৎকার করার চেষ্টা করলে পালিয়ে বাঁচি!"
সাহায্য করে কে বলে প্রশ্নও রাখেন। বিনিময় সবাই চায় তাই কিডনি আমার, সিদ্ধান্ত আমার। আর কারো দয়া দেখতে চাই না, কেউ বিকাশ রকেটে টাকা পাঠাক একদমই চাই না। এবার কিডনি বিক্রিই হোক নতুনভাবে পথচলা..
আমার বাবা ছোটবেলায় দ্বিতীয় বিয়ে করেন, সতীনের সংসার আমার মা করেননি। কখনো কাজের বেটি বোতল কুড়িয়ে বিক্রি করেই আজ পর্যন্ত বড় হয়েছি, আর কত?
কী করলে আপনি কিডনি বিক্রি থেকে সরে আসবেন? যদি কেউ টাকা দিয়ে দেয় কিংবা আগ্রহ প্রকাশ করেন বলা প্রসঙ্গে বলেন
"না, কেউ করুনা করে বিকাশ নগদে টাকা পাঠাক চাইবো না। আমি কিডনিই বিক্রি করতে চাই। কিডনি বিক্রি করে ঋণ পরিশোধ করবো আর একটা অটোরিকশা কিনবো, যা পারবো তাতেই চলবে। মারা তো যাবো না নাকি?
তবে হ্যা কেউ যদি দিতে চায় তবে ঋণ হিসাবে দু লক্ষ টাকা দিক। এটা আমি অটো চালিয়ে পরিশোধ করবো এই শর্তে আমি রাজী। তবে কেউ আমাকে চাকুরী দিবে, টাকা দিবে সাহায্যের নামে প্রতারণা করুক সেটা আর আমি চাই না।"
তাছাড়া তিনি অভিযোগ করে বলেন, জাতীয় জাদুঘরের সামনে ব্যানার টাঙানোর পর পুলিশের পক্ষ থেকেও ব্যানার সরাতে বলা হয়েছে। কিছু মানুষ স্বান্তনা দিয়ে পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েও আর কথা রাখেননি বলে জানান।
সাইফুল অনুরোধ করে বলেন যে, তিনি নাকি রোগী দেখে সরাসরি কথা বলে কিডনি বিক্রি করতে চান। রোগীও বাঁচবে তিনি নিজেও বাঁচবেন এটাই তাঁর প্রত্যাশা।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Thanks for supporting