নিজস্ব সংবাদ দাতা,
মধুপুরের বেদুরিয়া গ্রামে বনবিভাগ গ্রামীণফোনের নেটওয়ার্ক টাওয়ার ভেঙ্গে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ঐ এলাকার গ্রামবাসী। এলাকার সবাই বলছেন, বনে বাস করা মানুষের জন্য এই বনবিভাগ বাংলাদেশের জন্মলগ্ন থেকেই বিষফোঁড়া হয়ে দেখা দিয়েছে।
জানা গেছে, কিছুদিন আগে গ্রামীণফোন তাদের নিজস্ব নেটওয়ার্ক টাওয়ার বসায় সেই এলাকার তরুণ ফ্রিল্যান্সারদের আবেদনে সারা দিয়ে। কিন্তু কয়েকদিন যেতে না যেতেই সেই টাওয়ারে চোখ পড়ে বন পুলিশদের! তাঁরা মোটা অংকের চাঁদা দাবী করে বিভিন্ন অজুহাতে। তাতে ব্যর্থ হলে খুলে ফেলা্র নির্দেশে দেয়। এলাকার মানুষজনকে হামলা - মামলার হুমকী দেয়।
একজন তরুণ নাম উল্লেখ না করার শর্তে জানিয়েছেন, 'বন বিভাগ চায় না আমাদের এলাকায় কোন ইন্টারনেট থাকুক। তাঁরা গাছ বিক্রি করে রাতের আঁধারে। কোটি কোটী টাকার গাছ লোপাট হচ্ছে। সেগুলো ফেইসবুক, বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়াতে প্রকাশের ভয়েই তাঁরা গ্রামীণ টাওয়ারের বিরোধিতা করছে।"
কয়েক মাস আগে, প্রথম আলোর প্রথম পাতায় "বনে বসে সুবিরের ডলার আয়" শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশ পায়। পরবর্তীতে প্রথম আলো আরও কয়েক টি সংবাদ প্রকাশ করে শালবনের ভেতর কাজ করা শতাধিক ফ্রিল্যান্সারদের নিয়ে।
সংবাদটি আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক, ডাক ও টেলি যোগাযোগ মন্ত্রী আব্দুল জব্বার এবং গ্রামীণ ফোণ এর সিইও এর নজরে পড়লে তাঁরা মধুপুরের শালবন গায়রা গ্রামে একটি অস্থায়ী টাওয়ার স্থাপন করেন। গ্রামীণ ফোনের সি ই ও নিজে গায়রা গ্রামে গিয়ে গ্রামীণ টাওয়ার উদ্বোধন করেন। উৎসবে ভাসেন বনের আদিবাসীরা।
সেই উৎসবে যোগ দিয়ে বেদুরিয়া গ্রামের ২০ জন তরুণ ফ্রিল্যান্সার গ্রামীণ ফোনের সি ই ও'র কাছে গ্রামীণ টাওয়ারের আবেদন করেন। তাঁরা জানান, আরও প্রায় ১০ বছর আগেই আবেদন করলেও সাড়া দেয়নি গ্রামীণ ফোন। সিইও তৎক্ষণাৎ আশ্বাস দেন যে, গ্রামীণ ফোন খুব শীঘ্রই একটি নেটওয়ার্কের অস্থায়ী টাওয়ার বসাবেন বেদুরিয়াতেও। তিনি কথা রেখেছিলেন। কিন্তু তাতে বাধ সাধল বন খেকো বন বিভাগ স্বয়ং।
দেশের উন্নয়নের জন্য, প্রধান - মন্ত্রীর নির্দেশে যেখানে তরুণ সমাজ দিন রাত কাজ করছেন, যেখানে মধুপুরের আদিবাসী তরুণেরা প্রযুক্তিতে অবদান রাখছেন। সেখানে বন বিভাগ এই প্রত্যন্ত অঞ্চলে নেটওয়ার্ক টাওয়ার উপড়ে ফেলেছে। এলাকার এই কষ্টগুলো দেখার যেন কেউ নেই!
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Thanks for supporting